রাজধানীর উত্তরখানে ব্যাপারীপাড়ার একটি বাড়ির নিচতলায় অগ্নিকাণ্ডে দগ্ধ ৮ জনের মধ্যে সুফিয়া বেগম (৫০) নামে আরেকজন মারা গেছেন। রবিবার সকাল ৭টার দিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে তিনি মারা যান। তার শরীরের দগ্ধ ৯৯ শতাংশ হয়েছিল। এ নিয়ে এই দুর্ঘটনায় তিনজন মারা গেলেন।
শনিবার ভোরে রাজধানীর উত্তরখানের ব্যাপারীপাড়ায় অগ্নিকাণ্ডে একটি বাড়ির নিচতলার ফ্ল্যাটে বসবাসকারী তিন পরিবারের আটজন দগ্ধ হন। এর মধ্যে শনিবার আজিজুল (২৭) ও তার স্ত্রী মুসলিমা (২০) ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মারা যান। অগ্নিকাণ্ডে তাদের শরীরের ৯৯ শতাংশ দগ্ধ হয়েছিল।
দগ্ধ অপর ৫ জন হলেন- ডাবলু (৩৩), আনজু (২৫), আব্দুল্লাহ (৫), পূর্ণিমা (৩৫) ও সাগর (১২)। তারা ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে চিকিত্সাধীন রয়েছেন। গ্যাসের লাইন থেকে এ অগ্নিকাণ্ডের সূত্রপাত বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে।
বার্ন ইউনিটের আবাসিক চিকিত্সক পার্থ শংকর পাল জানান, দগ্ধ প্রত্যেকের অবস্থা আশঙ্কাজনক। প্রত্যেকের শ্বাসনালি পুড়ে গেছে। শিশুসহ দু’জন কম দগ্ধ হলেও শ্বাসনালি পুড়ে যাওয়ায় তাদের অবস্থাও আশঙ্কাজনক। আগুনে ডাবলুর শরীরের ৬৫ শতাংশ, আনজুর ৬ শতাংশ, আব্দুল্লাহর ১২ শতাংশ, পূর্ণিমার ৮০ শতাংশ ও সাগরের ৬৩ শতাংশ পুড়ে গেছে।
জানা গেছে, উত্তরখানের ব্যাপারীপাড়া এলাকায় হেলাল মার্কেটের কাছে মেহেদী হাসানের তিনতলা ভবন। ওই ভবনের নিচতলার ফ্ল্যাটে তিনটি পরিবার থাকতেন। তারা স্থানীয় একটি পোশাক কারখানায় চাকরি করতেন। তাদের সবার বাড়ি পাবনা জেলার ভাঙ্গুরা উপজেলার গোবিন্দপুর এলাকায়। শনিবার ভোর ৪টার দিকে কোনো একজন বাসিন্দা রান্না করতে গেলে চুলার গ্যাস থেকে অগ্নিকাণ্ডের সূত্রপাত ঘটে। মুহূর্তেই আগুন বাসার সব ঘরে ছড়িয়ে পড়ে। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের উত্তরা অফিসের তিনটি ইউনিট ঘটনাস্থলে গিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণ করে। এরপর তারা ওই বাসা থেকে দগ্ধ ৮ জনকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করে। সেখানে সকাল ১০টার দিকে আজিজুল চিকিত্সাধীন অবস্থায় মারা যান। রাতে তার স্ত্রী মারা যান।
উত্তরা ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স স্টেশনের সিনিয়র স্টেশন কর্মকর্তা মো. সফিকুল ইসলাম জানান, ধারণা করা হচ্ছে রান্নাঘরের চুলা থেকেই আগুন লেগেছে। তবে গ্যাসের চুলা বন্ধ না রাখায়, নাকি গ্যাসের পাইপ লাইনে লিকেজ থাকায় অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে, তা এখনো নিশ্চিত হওয়া যায়নি।