২৯শে মার্চ, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১৫ই চৈত্র, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ | ১৮ই রমজান, ১৪৪৫ হিজরি
ব্রেকিং নিউজ
২৯শে মার্চ, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১৫ই চৈত্র, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ | ১৮ই রমজান, ১৪৪৫ হিজরি
ব্রেকিং নিউজ
  • স্বাস্থ্য
  • ডেঙ্গু জ্বর থেকে মুক্তি মিলছে পেঁপে পাতার রস খেয়ে

ডেঙ্গু জ্বর থেকে মুক্তি মিলছে পেঁপে পাতার রস খেয়ে

বরিশালের গৌরনদী উপজেলার পিংগলাকাঠি গ্রামের একাধিক ডেঙ্গু রোগী সুস্থ হয়ে উঠেছেন পেঁপে পাতার রস খেয়ে। গত মঙ্গলবার পিংগলাকাঠি গ্রামে ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে নাছিমা বেগম (৩৫) নামের এক গৃহবধূর মৃত্যু হয়েছে। কিন্তু ওই গ্রামে ইতিপূর্বে আরও সাতজন ডেঙ্গু রোগে আক্রান্ত হয়েছিল। তাদের প্রত্যেককে পেঁপে পাতা খাওয়ানো হয়। সাতজনই পরে সুস্থ হয়ে ওঠে।

গ্রামবাসীদের দাবি, নাছিমা বেগমকে পেঁপে পাতার রস খাওয়ানো হয়নি বলেই এ পরিণতি। তাদের দাবি, গত ঈদুল ফিতরের পর ওই গ্রামে সিরাজ ফকির (৫২) ও তার মেয়ে অন্তরা (২০), জলিল সরদার (২২), সুমন হাওলাদার (২০), জুরাল ফকির (৩২), ইব্রাহিম সরদার (২২), রেনু বেগম (৪০) ও নাছিমা বেগম (৩৫) ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হন।

আক্রান্তরা স্থানীয় গৌরনদী উপজেলা স্বাস্থ্যকেন্দ্রে যান। কিন্তু সেখানে ঠিকঠাক মতো চিকিৎসা না পেয়ে বাড়ি ফিরে আসেন। এরপর সিরাজ ফকিরের পরামর্শে পেঁপে পাতার রস খাওয়া শুরু করেন। কয়েক দিনের মধ্যেই সবাই সুস্থ হয়ে ওঠেন।

এ বিষয়ে ডেঙ্গু আক্রান্ত সিরাজ ফকির বলেন, ঈদের দিন আমি ও আমার মেয়ে অন্তরা ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হই। প্রতিবেশী আরও পাঁচজন আক্রান্ত হন। গৌরনদীতে ডেঙ্গু রোগের চিকিৎসা না থাকায় আমরা চিন্তিত হয়ে পড়ি। আমার ছেলে ইন্টারনেটের মাধ্যমে পেঁপে পাতার রস খেলে ডেঙ্গু ভালো হয় বলে জানতে পারে। পরে আমি ও আমার মেয়ে প্রতিদিন সকাল-বিকাল ও দুপুরে আধা কেজি করে পেঁপে পাতার রস ও একটি করে প্যারাসিটামল ট্যাবলেট খাওয়া শুরু করি। সাতদিনের মধ্যে আমরা দুজন সম্পূর্ণ সুস্থ হই।

তিনি জানান, পরে আমার পরামর্শে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত আমার পাঁচ প্রতিবেশী পেঁপে পাতার রস খেয়ে আরোগ্য লাভ করেন। সিরাজ ফকির বলেন, আমরা নাছিমা বেগমকেও পেঁপে পাতার রস খাওয়ানোর পরামর্শ দিয়েছিলাম তাদের পরিবারের লোকজনকে। কিন্তু তারা খাওয়াননি।

ডেঙ্গু রোগে পেঁপে পাতার উপকারিতার বিষয়টি নতুন নয়। ইতিমধ্যে গবেষণায়ও বিষয়টি প্রমাণিত হয়েছে। মালয়েশিয়ার নটিংহাম বিশ্ববিদ্যালয়ের এক গবেষণায় পেঁপে পাতায় ডেঙ্গু নিরাময়ের প্রমাণ মিলেছে। গত বছরের ৩০ এপ্রিল এ বিষয়ে একটি গবেষণাপত্র প্রকাশ করে ওই বিশ্ববিদ্যালয়।

‘ডেঙ্গু জ্বরের নিরাময়ে পেঁপে পাতা’ শীর্ষক ওই গবেষণায় বলা হয়েছে, ভয়ঙ্কর ডেঙ্গু রোগ সারাতে ঐহিতবাহী ভেষজ হিসেবে পেঁপে পাতার রস খুবই কার্যকরী। সাধারণত ডেঙ্গু সারাতে নির্দিষ্ট কোনো ওষুধ নেই। তবে পেঁপে পাতার নির্যাস প্রক্রিয়াকরণের মাধ্যমে নিয়মিত (পিল) ওষুধ হিসেবে ব্যবহার করা সম্ভব।

নটিংহাম বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক সহকারী অধ্যাপক ড. হি চিং লিকের নেতৃত্বে কেমিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের একদল গবেষক বিষয়টি নিয়ে দীর্ঘদিন গবেষণা করেন। মালয়েশিয়া সরকারের অর্থায়নে ওই গবেষণা পরিচালিত হয়।

গবেষণায় দেখা গেছে, পেঁপে পাতার রস ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীর আভ্যন্তরীণ রক্তক্ষরণ বন্ধ করতে পারে। এছাড়া রক্তের প্লাটিলেট কমে যাওয়া বন্ধ করে তা বাড়াতে বড় ভূমিকা রাখে।

ড. হি চিং লিক বলেন, মালয়েশিয়া ছাড়াও প্রায় ২০টি দেশে ডেঙ্গু একটি বড় সমস্যা। এতে আক্রান্ত হয়ে মানুষ মারা যাচ্ছে আবার অনেক মানুষ নতুন করে আক্রান্ত হচ্ছে। বিষয়টি আমাকে অনুপ্রেরণা যোগায়। এজন্য কীভাবে সহজে এটি প্রতিরোধ করা যায় তা নিয়ে গবেষণা শুরু করি। আর গবেষণায় প্রমাণ পাই পেঁপে পাতার রস ডেঙ্গুর চিকিৎসায় বেশ কার্যকরী।

Comments

Facebook
Twitter
Pinterest
Reddit
Skype
Email
LinkedIn

নিউজ আর্কাইভ

সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
 
১০
১১১২১৩১৪১৫১৬১৭
১৮১৯২০২১২২২৩২৪
২৫২৬২৭২৮২৯৩০৩১