ভারতে পুলওয়ামার জঙ্গি হামলায় প্রবল বিরোধ দেখা দিয়েছে জম্মু ও কাশ্মীরের মধ্যে। বিভিন্ন এলাকায় থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। জম্মুতে কাশ্মীরিদের ওপর হামলার জেরে জারি করা হয়েছে কার্ফু। হামলায় আহত হয়েছেন অন্তত ৩৭ জন। এছাড়া ভারতের বিভিন্ন জায়গায় কাশ্মীরি পড়ুয়ারা হেনস্থার শিকার হচ্ছেন বলে সংবাদমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে। কাশ্মীরিদের ওপরে হামলার প্রতিবাদে হরতাল ডাক দিয়েছে বিভিন্ন সংগঠন।
জম্মু-কাশ্মীরের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী মেহবুবা মুফতির মতে, পুলওয়ামার হামলা যেন কোনও বিভেদকামী চক্রান্তে ইন্ধন না জোগায় তা নিয়ে সতর্ক থাকতে হবে।
শনিবার পুলওয়ামার হামলার প্রতিবাদে জম্মুতে হরতালের ডাক দেয় বিভিন্ন হিন্দুত্ববাদী সংগঠন। জম্মুর বিভিন্ন অংশে বড় মাপের পাকিস্তান-বিরোধী বিক্ষোভ শুরু হয়। ক্রমশ তা কাশ্মীরি-বিরোধী বিক্ষোভের রুপ নেয়। বিভিন্ন কাশ্মীরিপ্রধান এলাকা বেছে বেছে হামলা চালানো হয়।
সেখানকার দায়িত্বরত পুলিশ জানিয়েছে, জুয়েল চক, পুরানি মান্ডি, রেহরি, শক্তিনগর, পাক্কা ডাঙ্গা, জানিপুর, গাঁধীনগর, বক্সীনগর এলাকায় পথে নামে জনতা। গুজ্জর নগরে কয়েকটি গাড়িতে হামলা চালানো হয়। অন্য রাজ্যেও কাশ্মীরিদের উপরে হামলার অভিযোগ উঠেছে। শান্তি বজায় রাখার আর্জি জানিয়েছেন রাজ্যপাল সত্যপাল মালিক।
গতকালের মত আজকেও (রবিবার) বিক্ষিপ্ত তোপের মুখে পড়েছে জম্মু। নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক বেশ কয়েক জন কাশ্মীরি জানিয়েছেন, তাদের বাড়ি লক্ষ্য করে পাথর ছোড়া হয়েছে।
এক জন জানায়, বাঁচতে চাইলে জম্মু ছেড়ে চলে যাওয়ার হুমকি দিয়েছে ওরা। আমরা জিনিসপত্র গোছাতে শুরু করেছি।’
রাজ্য পর্যটন দফতরের জম্মুর রিসেপশন সেন্টারে কর্মরত কাশ্মীরিরা সুরক্ষা চেয়েছেন।
পিপলস ডেমোক্রেটিক পার্টির (পিডিপি) নেত্রী মেহবুবা মুফতির বক্তব্য, ‘জম্মুতে দুষ্কৃতীরা পরিস্থিতির সুযোগ নিতে চাইছে দেখে আমি উদ্বিগ্ন।রাজ্যপালের প্রশাসনের উচিত ছিল সংখ্যালঘু অধ্যুষিত এলাকাগুলিতে সুরক্ষার ব্যবস্থা করা।জম্মুর আইজি-কে অতিরিক্ত নিরাপত্তার ব্যবস্থা করতে অনুরোধ করেছি।’
ভারতের ন্যাশনাল কনফারেন্স নেতা ওমর আবদুল্লার কথায়, কাশ্মীরি বা মুসলিমেরা সিআরপি জওয়ানদের উপরে হামলা করেননি। করেছে জঙ্গিরা। ধর্ম বা জাতির ভিত্তিতে নিরীহ মানুষের উপরে হামলা চালিয়ে জওয়ানদের আত্মত্যাগকে সম্মান জানানো যাবে না।