২৩শে জানুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ৯ই মাঘ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | ২২শে রজব, ১৪৪৬ হিজরি
২৩শে জানুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ৯ই মাঘ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | ২২শে রজব, ১৪৪৬ হিজরি
  • সারাদেশ
  • জীবত থাকতেই কবর খুঁড়ে মৃত্যুর অপেক্ষায় হানিফ

জীবত থাকতেই কবর খুঁড়ে মৃত্যুর অপেক্ষায় হানিফ

মত্যুর পর মানুষের মরদেহ দাপনের জন্য কবর খুঁড়া হলেও জীবত থাকতেই কবর খুঁড়ে চারপাশ পাকা করে মৃত্যুর অপেক্ষায় রয়েছেন ৮০ বছর বয়সী মো: হানিফ। হানিফের এমন কান্ডে চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে এলাকায়। এনিয়ে সাধারণ মানুষের মাঝে তৈরী হয়েছে কৌতুহলের।

ঘটনাটি ঘটেছে নোয়াখালীর দ্বীপ উপজেলা হাতিয়ার বুড়িরচর ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের জোড়খালী গ্রামের মোজাফ্ফর আহমদের বাড়িতে।

মো. হানিফ ওই বাড়ির মরহুম মোজাফ্ফর আহমদের ছেলে। নিজের জন্য কবর তৈরি করা হানিফ স্থানীয়ভাবে জমিদার ডাক্তার নামে পরিচিত। তিনি চার ছেলে ও পাঁচ মেয়ের জনক।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, বাড়ির মধ্যে বিশাল পাকা ঘর। ঘরের ডান পাশে মাটি খনন করে মাটির তলদেশ থেকে ইটের গাঁথুনি দিয়ে তলদেশ থেকে তৈরি হচ্ছে বিশালাকৃতির কবর। কবর নির্মাণকাজে পাশে বসে তদারকি করছেন আর কথার ফাঁকে ফাঁকে চোখের পানি মুচছেন বৃদ্ধ হানিফ। কবর খুঁড়া শেষে এখন অপেক্ষা মৃত্যুর।

জানা গেছে, হানিফ চট্টগ্রামের বোয়ালখালীর চরণদ্বীপ দরবার শরীফের মাওলানা খাইরুল বাশার ফারুকীর একজন খলিফা। মাইজভাণ্ডার দরবার শরীফে তিনি ৫৫ বছরেরও অধিক সময় ধরে জড়িত। প্রতিবছর আরবি রবিউস সানি চন্দ্র মাসের ১১ তারিখে পারিবারিকভাবে নিজ বাড়িতে ওরশের আয়োজন করে আসছেন তিনি। বিভিন্ন অঞ্চলে তার রয়েছে প্রায় ৩০ হাজার মুরিদ।

বৃদ্ধ মো: হানিফ বলেন, আমার ক্রয়কৃত নিজস্ব জায়গায় আমি আমার কবর তৈরি করছি। মৃত্যুর পরে ভক্তরা মাজার তৈরি করে তা জেয়ারত করবে।

হানিফের ছেলে শাহাবুদ্দিন বলেন, আমার বাবা দীর্ঘদিন মাইজভাণ্ডার তরিকায় হাজার হাজার আশেকান সৃষ্টি করেছেন। প্রতিবছর তিনি আশেকানদের নিয়ে ওরশ মাহফিল করে আসছেন। যেহেতু তিনি রোগশয্যায়, যেকোনো সময় মৃত্যুবরণ করতে পারেন। উনার ইচ্ছাতেই নিজের কবরটা করে যেতে চাইছেন বলেই আমরা বাবার সামনে কবরটা তৈরি করছি।

তাঁর ছোট ছেলে মো: শাহারাজ উদ্দিন ঘরের পাশে বাবার জন্য কবর তৈরি প্রসঙ্গে বলেন, বাবার মৃত্যুর পর উনার ইচ্ছায় তাকে এখানে দাফন দেয়া হবে। তবে বাবার কবরকে মাজার বানিয়ে কোনো প্রকার ব্যবসা করার ইচ্ছা আমাদের কারো নেই।

প্রতিবেশী জাফর উদ্দিন নামের একজন বলেন, মৃত্যুর আগে কারো জন্য কখনো কবর বানাতে দেখিনি কিংবা শুনিনি। কিন্তু জমিদার ডাক্তার জীবিত থাকতেই কবর তৈরিতে এলাকায় কেউ ভালো বললেও অনেকেই আবার খারাপ মন্তব্য করতে দেখা যায়। তবে অদৃশ্য কোনো এক ভয়ে প্রকাশ্যে কেউ কিছু বলতে পারছেন না।

স্থানীয় হাজি এমরাত আলী জামে মসজিদের খতিব মাওলানা মাহমুদুল হাসান বলেন, আগে থেকেই কবরের জন্য স্থান নির্ধারণ কিংবা মাটি ভরাট করা যেতে পারে। কিন্তু মৃত্যুর আগে বা পরে কবর বাঁধাই করা ইসলাম সমর্থন করে না। এছাড়াও যদি কোনো অসৎ বা মাজার করার উদ্দেশ্য থাকে তাহলে এলাকাবাসীর উচিত এটি প্রতিহত করা।

বুড়িরচর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান ফখরুল ইসলাম বলেন, মুত্যুর আগেই জীবিত মানুষের জন্য কবর খুড়া হয়েছে এমন খবর পেয়ে ওই ব্যক্তির ছেলেদেরকে জিজ্ঞাসা করলাম, যে তারা এটা কেন করছে? তার ছেলেদের উত্তর, তার বাবার একান্ত ইচ্ছা যেন উনি উনার কবরটা দেখে যেতে পারে। আমি তাদেরকে বলেছি, ইসলামের বিধি বিধানের বাইরে এ সকল কাজ করা যাবে না। আসলে এগুলোর কোনো বিধান নেই। এ সকল গর্হিত কাজ এখনই বন্ধ করতে প্রশাসনের সহযোগিতা চাওয়া হবে।

Comments

Facebook
Twitter
Pinterest
Reddit
Skype
Email
LinkedIn

নিউজ আর্কাইভ

সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
 
১০১১১২
১৩১৪১৫১৬১৭১৮১৯
২০২১২২২৩২৪২৫২৬
২৭২৮২৯৩০৩১