১৯শে ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ৬ই ফাল্গুন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | ১৯শে শাবান, ১৪৪৬ হিজরি
১৯শে ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ৬ই ফাল্গুন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | ১৯শে শাবান, ১৪৪৬ হিজরি

তিন দলিল লেখক যৌথ অভিযানে আটক

বাগেরহাটের চিতলমারী উপজেলা সাবরেজিষ্ট্র অফিসের দলিল লেখক সমিতিতে যৌথ বাহিনী অভিযান চালিয়েছে। উপজেলা পরিষদের মধ্যে থেকে টাকাসহ দলিল লেখক ‘সিন্ডিকেটের’ ৩ জনকে আটক করেছে। এদের বিরুদ্ধে নানা অনিয়মের অভিযোগ রয়েছে। এ ঘটনায় শুক্রবার (২২ নভেম্বর) শিবপুর বেপারীপাড়া গ্রামের বাবুল হোসেনের ছেলে এস এম নান্টু হাসান বাদী হয়ে থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। মামলায় অজ্ঞাত ৫-৬ জনকে আসামী করা হয়েছে। পুলিশ শুক্রবার দুপুরে গ্রেফতারকৃতদের আদালতে প্রেরণ করেছে।

এরা হল, দলিল লেখক সুব্রত অধিকারী (৪২), সদর ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি ও দলিল লেখক সমিতির সভাপতি খান মনিরুজ্জামান (৫১) ও চিতলমারী উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারন সম্পাদক ও দলিল লেখক শেখ শামিম আনোয়ার (৫১)। সুব্রত অধিকারী বাগেরহাট সদরের খালিশপুর গ্রামের কালিপদ অধিকারীর ছেলে, খান মনিরুজ্জামান চিতলমারী উপজেলার চিতলমারী গ্রামের মৃত আব্দুল মজিদ খানের ছেলে ও শেখ শামিম আনোয়ার শিবপুর বেপারীপাড়া গ্রামের মৃত শেখ মোস্তফা আনোয়ারের ছেলে।

ভূক্তভোগীদের অভিযোগ, দলিল লেখকদের কাছে দল কোন মূখ্য বিষয় নয়। কিন্তু দলের পদ ব্যবহার করে প্রভাবশালী বংশের লোকদের সভাপতি ও সম্পাদকের পদ দিয়ে গড়ে তোল হয় শক্তিশালী দলিল লেখক সিন্ডিকেট বা সমিতি। এই সিন্ডিকেটের নামে চলে নানা অনিয়ম, দূর্নীতি ও গরীবের কষ্টার্জিত টাকা ও জমি হাতিয়ে নেওয়ার নানা কৌশল। ওদের শক্তিশালী চক্রের হাতে গোটা উপজেলাবাসি জিম্মি। ভয়ে কেউ টু শব্দ করে না। তাই কয়েক যুগ ধরে চলে আসছে এ সিন্ডিকেটের কার্যক্রম।

মামলার বিবরণে জানা গেছে, বাদী এস এম নান্টু হাসান পেশায় একজন ব্যবসায়ী। গ্রেফতারকৃত ৩ জন আসামীসহ অজ্ঞাত পলাতক আসামীরা চিতলমারী উপজেলা সাবরেজিষ্ট্রার অফিসে দলিল লেখক সমিতির কথিত ব্যানারে দীর্ঘদিন যাবত এলাকার সাধারণ ও নীরিহ মানুষের নিকট হতে দলিল রেজিষ্ট্রি বাবদ সরকার নির্ধারিত ফি ছাড়াও প্রতারণামূলকভাবে অতিরিক্ত টাকা আত্মসাৎ করেছে। তিনি সমাজের একজন সচেতন নাগরিক হিসেবে বিষয়টি স্থানীয় যৌথ বাহিনীকে অবহিত করেন। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় যৌথবাহিনী উপজেলা পরিষদের মধ্যে সাবরেজিষ্ট্রার অফিসে অভিযান চালান।

এ সময় দলিল লেখক সমিতির সভাপতি ও মামলার ২নং আসামীর চেম্বারের টেবিলের ডানপাশের ড্রয়ারের ভিতর থেকে বর্নিত সকল আসামীসহ ৫-৬ জন আসামী টাকা ভাগবাটোয়ারা করার সময় নগদ ৩ লাখ ৫৯ হাজার টাকাসহ ৩ জনকে আটক করেন।

নাম না প্রকাশ করার শর্তে একাধিক ভূক্তভোগী জানান, চিতলমারী উপজেলা সাবরেজিষ্ট্রার অফিসকে ঘিরে ৫৫-৬০ জন দলিল লেখক রয়েছেন। এদের মধ্যে কয়েকজন মানুষকে জিম্মি করে টাকা হাতিয়ে নেয়। নানাপ্রকার হয়রানী ও ছলচাতুরী করে। গত ৫ আগস্টের আগে এই সিন্ডিকেটের সভাপতি ও সম্পাদক ছিলেন আওয়ামী লীগ ও যুবলীগের লোক এবং ৫ আগস্টের পর সভাপতি সম্পাদক হয়েছেন স্থানীয় বিএনপির দুই নেতা। যা সরকারের বিভিন্ন সংস্থা ও দলীয় নেতারা তদন্ত করলে থলের বিড়াল বেরিয়ে আসবে। তবে এতদিনের পুরানো সিন্ডিকেটে অভিযান চালানোতে উপজেলার সর্বস্তরের মানুষ যৌথ বাহিনীকে সাধুবাদ জানিয়েছেন।

চিতলমারী থানার ওসি এস এম শাহাদাৎ হোসেন বলেন, ‘যৌথবাহিনী অভিযান চালিয়ে টাকাসহ ৩ জন আসামীকে ঘিরে রাখে। আমাদের খবর দিলে আমরা গিয়ে টাকাসহ আসামীদের থানায় নিয়ে আসি। এ ঘটনায় থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। আসামীদের বিজ্ঞ আদালতে প্রেরণ করেছি।’

এ ব্যপারে জানতে চিতলমারী উপজেলা সাবরেজিষ্ট্রার সমীর কর্মকারকে বারবার ফোন দিলেও তিনি তা রিসিভ করেননি।

তবে জেলা সারেজিষ্টার মো. রুহুল কুদ্দুস বলেন, ‘বিষয়টি আমি শুনেছি। অফিস বন্ধ তাই রবিবারের আগে বিস্তারিত কিছু বলতে পারবনা। দলিল লেখকরা অনিয়ম-দূর্নীতি করলে মানুষ অভিযোগ দিলে আমরা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিব।’

Comments

Facebook
Twitter
Pinterest
Reddit
Skype
Email
LinkedIn

নিউজ আর্কাইভ

সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
 
১০১১১২১৩১৪১৫১৬
১৭১৮১৯২০২১২২২৩
২৪২৫২৬২৭২৮