জাতীয় সংসদের বিরোধীদলীয় নেতা জি এম কাদের বলেছেন, ব্যাংকগুলোর অবস্থা দিন দিন খারাপ থেকে প্রতিদিন আরও খারাপের দিকে যাচ্ছে। উন্নতি তেমন কিছু হচ্ছে না। ব্যাংকগুলো যে রুগ্ন ও ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে, তার উদাহরণ এনআরবিসি ব্যাংক। এই ব্যাংক দুর্নীতিতে ডুবে যাচ্ছে।
বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদের অধিবেশনের সমাপনী ভাষণে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, এনআরবিসি ব্যাংকের ১৩ জন পরিচালক আমাকে গত ৩০ এপ্রিল একটি চিঠি দিয়েছেন। ব্যাংকটি দুর্নীতিতে ডুবে যাচ্ছে। উদ্যোক্তা পরিচালকরা বলছেন, তারা এখানে লগ্নি করেছেন। এখন ব্যাংক থাকবে কি না, তারা তাদের টাকা পাবেন কি না, জানেন না। তারা মানুষের দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন।
তিনি বিদ্যুৎ পরিস্থিতি নিয়ে কথা বলেন। বলেন, বাস্তবতা হচ্ছে প্রয়োজনের সময় লোডশেডিং কমাতে পারেনি এবং নিশ্চিত করতে পারেনি নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ। বিদ্যুৎ উৎপাদন সক্ষমতা প্রয়োজনের চেয়ে বেশি। প্রয়োজনের বেশি ১০ হাজার মেগাওয়াটের ওপরে উৎপাদনক্ষমতার বিদ্যুৎকেন্দ্র বসে আছে। বিদ্যুতের উৎপাদন ও সরবরাহের বিষয়টি পিডিবির কর্মকর্তাদের পরিকল্পনা প্রণয়নে বিবেচনা করা যায়, এ চিন্তা তাদের মাথাতেই আসেনি। এই অতিরিক্ত উৎপাদনক্ষম বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলো বেসরকারি খাতে অনেক বেশি সুবিধা নিয়ে স্থাপন করা হয়েছিল এমন পরিস্থিতিতে সরবরাহ নিরবচ্ছিন্ন রাখার জন্য।
বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোকে উৎপাদন ছাড়াই ক্যাপাসিটি চার্জ দিতে হচ্ছে জানিয়ে তিনি বলেন, বিদ্যুতের ঘাটতি কাটিয়ে উঠতে জনগণের অর্থে গঠিত সরকারি কোষাগার থেকে বিপুল পরিমাণ ভর্তুকি দিতে হয়। এখন বিদ্যুতের দাম বাড়ানো হচ্ছে। ক্যাপাসিটি চার্জ না দিলে দাম বাড়াতে হতো না। সামনে ক্যাপাসিটি চার্জ আরও বেশি দিতে হবে।
তিনি বলেন, অলস বসিয়ে রাখা বেসরকারি ভাড়া করা বিদ্যুৎকেন্দ্রের ক্যাপাসিটি চার্জের জন্য এবং বিদ্যুতের দাম বাড়িয়ে গ্রাহকদের ঘাড়ে সরাসরি বোঝা চাপিয়ে ভর্তুকির অঙ্ক কমানো হচ্ছে ঠিকই, কিন্তু বাড়তি দামের মাধ্যমে প্রাপ্ত অধিক অর্থের অধিকাংশ ক্যাপাসিটি চার্জ খাতে ব্যবহার হবে।
লোডশেডিং বাড়ছে উল্লেখ করেন জি এম কাদের বলেন, রাজধানী ঢাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহে তেমন কোনও ঘাটতি হয়নি। শহরের তুলনায় গ্রামাঞ্চলে লোডশেডিং বাড়ছে। এপ্রিলের শেষ সপ্তাহে যখন সারা দেশে তীব্র তাপদাহ চলছিল, তখন সবচেয়ে বেশি লোডশেডিং ভোগ করেছে গ্রামাঞ্চলের মানুষ। রংপুর, ময়মনসিংহ, কুমিল্লা, রাজশাহী, সিলেট অঞ্চল ছাড়াও ঢাকার আশপাশের জেলাগুলো এবং বরিশাল, ব্রাহ্মণবাড়িয়া ও ফেনী—এসব এলাকায় ৮ থেকে ১২ ঘণ্টা পর্যন্ত লোডশেডিং করতে হয়েছে। তীব্র তাপদাহের সময়। এমনিতেই দাবদাহ৷ তারওপর লোডশেডিং। মানুষের জীবন ছিলো অতিষ্ঠ।