সুনামগঞ্জের প্রত্যন্ত শাল্লা উপজেলা সদরের (ঘুঙ্গিয়ারগাঁও) বাজারে দেখা দিয়েছে বিশুদ্ধ পানির সংকট। বিশুদ্ধ খাবার পানির একমাত্র উৎস নলকূপ পর্যাপ্ত পরিমাণে না থাকায়, বিগত কয়েক বছর যাবত দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে বাজারের ব্যবসায়ীসহ যাতায়াতকারী হাজারো মানুষ।
বাজারে ৪-৫ টি টিউবওয়েল থাকলেও সুপেয় পানির চাহিদা মেটাতে কাজে আসছে না একটিও। তাই বাধ্য হয়ে ব্যবসায়ীগণ দূর-দূরান্ত থেকে টাকার বিনিময়ে বিশুদ্ধ পানির সরবরাহ করেন। পানির এই সংকট নিরসনে একাধিক বার জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরে যোগাযোগ করেও ব্যর্থ হয়েছে বলে জানান বাজার কমিটি ও ব্যবসায়ীরা।
ব্যবসায়ী ও স্থানীয় সূত্রে জানাজায়, বিগত কয়েক বছর যাবত আমরা বাজারে পানির জন্য খুবই কষ্ট করতেছি৷ আমরা একটু পানি বেশ দূর নদী থেকে আনতে হয়। আর যে টিউবওয়েল আছে এগুলোও নষ্ট। বিশুদ্ধ পানির অভাবে ব্যবসায়ী ও কাস্টমার অনেক ভোগান্তিতে রয়েছে। দুয়েকটা বড় রেস্তোরার মালিকরা নিজস্ব মটরের সাহায্যে পানি তুলে তাদের চাহিদা পূর্ণ করে। সবচেয়ে বেশি সমস্যায় পড়েছে ছোট রেস্তোরা ও চায়ের দোকানদার। আবার অনেক মানুষ বোতলের পানি পান করে তৃষ্ণা মিটায়।
পানিবহনকারী শ্রমিক বলেন, বাজারে কোনো টিউবওয়েল না থাকায় আমি বিভিন্ন জায়গা থেকে পানি এনে হোটেল ও চায়ের দোকানে দেই। বিনিময়ে হোটেলের মালিকরা আমারে টাকা দেয়।
শাল্লা সদর জনবহুল বাজারে কয়েক হাজার মানুষ বসবাস ও ব্যবসা বাণিজ্য করে। কিন্তু বিশুদ্ধ নলকূপের পানির অভাবে খুব কষ্টে আছে। তাই মানুষকে জরুরীভাবে নলকূপ বসিয়ে বিশুদ্ধ খাবার পানি খাবারের ব্যবস্থা করার জন্য কর্তৃপক্ষের নিকট দাবী জানান সাবেক চেয়ারম্যান ও বিএনপির সহ-সভাপতি জাকির হোসেন।
শাল্লা সদর (ঘুঙ্গিয়ারগাঁও) বাজার কমিটির সেক্রেটারি সুবীর সরকার পান্না বলেন, শাল্লা উপজেলা সদরের প্রধানত বাজার এখানে ব্যবসায়ী ও অফিস-আদালতে প্রতিনিয়ত অসংখ্য মানুষের যাতায়াত। কিন্তু কোনো টিউবওয়েল না থাকায় জলের মারাত্মক সংকটে পড়ছে মানুষজন। আমরা কয়েকবার সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে গিয়েছি। এখন আপনাদের মাধ্যমে আমাদের প্রাণের দাবি জানাই বাজারে হাজারো মানুষের জলের চাহিদা পূরণ করতে অন্তত ৩-৪ টি নলকূপ অতীব জরুরী প্রয়োজন।
বাজারের সবচেয়ে বড় ব্যবসায়ী ও সাবেক সভাপতি মহিতোষ দাশ আক্ষেপ করে বলেন, আমরা দুই বছর যাবত বাজারে টিউবওয়েল এর জন্য হয়রান হচ্ছি। বেশ কয়েকবার পাবলিক হেলথ ইঞ্জিনিয়ার ও আগের ইউএনও এর কাছে গিয়েছিলাম। ইঞ্জিনিয়ার বলছিলেন জায়গা ব্যবস্থা করার জন্য কিন্তু আমরা তাগিদ দিলেও এখন পর্যন্ত কোনো খবর নাই, উনি উনার মতোই আছেন।
বাজারের সভাপতি লুৎফর রহমান জানান, আমরা জনস্বাস্থ্য ইঞ্জিনিয়ারের সঙ্গে আলোচনা করছি বলছে দিবেন কিন্তু কবে দিবে জানায় নি। আমরা সুযোগ করে ইউএনও মহোদয়ের সাথেও আলোচনা করব।
এ বিষয়ে জনস্বাস্থ্য ইঞ্জিনিয়ার রাশেদুল ইসলামকে কল দিয়ে বারবার চেষ্টা করলে নাম্বার বন্ধ পাওয়া যায়। পরে অফিসে খোঁজ নিয়ে জানাজায় তিনি পরিবার নিয়ে ঢাকা চিকিৎসায় আছেন।
তবে এ বিষয়ে সুনামগঞ্জ জেলার প্রধান জনস্বাস্থ্য প্রকৌশলী সৈয়দ খালেদুল ইসলাম জানান, আমার বিষয়টা জানা নেই।
পরে বিস্তারিত জেনে প্রতিবেদকে আবার কল দিয়ে জানান, আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ জনস্বার্থে সুন্দর একটা বিষয় উপস্থাপনের জন্য। আগামী ১ মাসের মধ্যে ঘুঙ্গিয়ারগাঁও বাজারে দু্ইটি সাবমার্সিবল টিউবওয়েল দেওয়া হবে। আর বাজারে যে ৪টি টিউবওয়েল রয়েছে এগুলো বাজার কমিটি সামান্য টাকা খরচ করলে মেরামত হয়ে যাবে। এগুলো আপনারা একটু বাজারের দায়িত্বশীল যারা আছে তাদেরকে বলবেন প্লীজ৷