প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বলেছেন, ভারতের কাছে প্রতিবেশীই প্রথম। আর সেজন্যই বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকেই প্রথম রাষ্ট্রীয় অতিথি হিসেবে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। ভারতের সবচেয়ে বড় অংশীদার হলো বাংলাদেশ। ২০২৬ সালে উন্নয়নশীল দেশে উন্নীত হবে বাংলাদেশ, সেসময়ও ভারতের সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে।
শনিবার নয়াদিল্লিতে হায়দ্রাবাদ হাউসে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক শেষে যৌথ সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন নরেন্দ্র মোদি। তিনি বলেন, দুই দেশ এরইমধ্যে বড় বড় অনেক কাজ একসঙ্গে করেছে। আখাউড়া-আগরতলায় রেল লিংক প্রকল্পের কাজ শুরু হয়েছে। খুলনার মোংলা পোর্টের মাধ্যমে ভারতের উত্তর পূর্বাঞ্চলের রাজ্যগুলোর জন্য পণ্য আমদানির সুবিধা পাওয়া যাচ্ছে। এমনকী যৌথ চেষ্টায় রামপালে চালু হয়েছে, ১৩২০ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন মৈত্রী তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রটিও।
নরেন্দ্র মোদি উল্লেখ করেন, ভারতীয় রুপিতে বাণিজ্যও চলছে। ভারত বাংলাদেশকেই প্রথম পাইপ লাইনে জ্বালানি তেল সরবরাহ করছে। এমন কী, আঞ্চলিক সহযোগিতার আওতায় নেপালের বিদ্যুৎও বাংলাদেশে যাবে ভারতের মধ্যে দিয়ে। এসব কাজ আমাদের সম্পর্ককে আরও দৃঢ় করেছে।
নরেন্দ্র মোদি বলেন, আজ দুই দেশ মিলে ভবিষ্যতের জন্য পরিকল্পনা ও লক্ষ্য নিয়ে এগোচ্ছে। গ্রিন পার্টনারশিপ, ডিজিটাল পার্টনারশিপ ব্লু-ইকনোমির মত বিষয়গুলো নিয়ে একসঙ্গে কাজ করে এগিয়ে যেতে সহমতে পৌঁছেছি আমরা। ভারত-বাংলাদেশ মৈত্রী স্যাটেলাইট আমাদের সম্পর্ককে নতুন উচ্চতায় নিয়ে যাবে। আমাদের ফোকাসটা হলো-সংযুক্তি, বাণিজ্য এবং পারস্পরিক সহযোগিতা।
মোদি বলেন, ১৯৬৫ সালের পর গত ১০ বছরে সংযুক্তিতে দুই দেশ অনেক দূর এগিয়েছে। এখন সময় ডিজিটাল আর এনার্জি কানেক্টিভিটি বাড়ানোর। এর মাধ্যমে দুই দেশেরই অর্থনৈতিক গতিশীলতা আসছে। আমাদের আর্থিক সম্পর্ককে আরও ভালো করতে দুই পক্ষই কমপ্রিনহেনসিভ ইকনোমিক পার্টনারশিপ অ্যাগ্রিমেন্ট চূড়ান্ত করতে আলাপ আলোচনা শুরু করেছে।
বাংলাদেশের সিরাজগঞ্জে একটি ইনল্যান্ড কন্টেইনার ডিপো নির্মাণে ভারত সমর্থন ও সহযোগিতাও দিচ্ছে। ৫৪টি অভিন্ন নদী দুই দেশের মধ্যে প্রবাহিত। বাংলাদেশে তিস্তা নদী সংরক্ষণে কী করণীয় রয়েছে, তা নিয়ে আলাপ করতে, শিগগিরই একটি কারিগরি দল বাংলাদেশ সফর করবে। কাউন্টার টেরোরিজম, কট্টোরবাদ ও সীমান্তে শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বিরাজে আপনাদের সহযোগিতা বড় নিশ্চয়তা দিয়েছে বলেও উল্লেখ করে ভারতের প্রধানমন্ত্রী।
তিনি আরও বলেন, ভারত মহাসাগরের উন্নয়নে আমাদের লক্ষ্য অভিন্ন। বিমসটেকসহ অন্যান্য আঞ্চলিক-আন্তঃরাষ্ট্রীয় ফোরামগুলোতে আমরা একযোগে কাজ করবো। জনগণের মধ্যে নিবিড় যোগাযোগ আমাদের সম্পর্ককে আরও গভীর করেছে। বাংলাদেশিদের চিকিৎসা সেবার সুবিধায় ই-মেডিকেল ভিসা সুবিধা চালু করছে ভারত। বাংলাদেশের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের জনগণের ভারত গমনের সুযোগ সম্প্রসারণে আমরা রংপুরে একটি উপ-হাইকমিশন স্থাপনের সিদ্ধান্ত নিয়েছি।