এভার কেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার অসুস্থতা রোববার সন্ধ্যার পর থেকেই বাড়তে থাকে, এমনটিই জানা গেছে সংশ্লিষ্ট সূত্রে। রাত বাড়তে থাকলেও পরিস্থিতির উন্নতি না হওয়ায় তড়িঘড়ি করেই মেডিক্যাল বোর্ডের সভা ডাকা হয়।
বোর্ডের সদস্য ছাড়াও বিদেশ থেকে একাধিক বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ভার্চুয়ালি এ সভায় অংশ নেন। তবে হাসপাতাল কিংবা বিএনপি, কোনো পক্ষই এ ব্যাপারে খোলাসা করে কিছু বলেনি। বিএনপি মিডিয়া সেলের সদস্য, শায়রুল কবির খানকে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, বিষয়টি তার জানা নেই।
এই দফায় গত ৯ আগস্ট থেকে হাসপাতালে ভর্তি বেগম খালেদা জিয়া। নানাবিধ জটিলতায় ভুগছেন তিনি। সব কিছু ছাড়িয়ে সবচেয়ে বড়ো হয়ে দেখা দিয়েছে লিভারের সমস্যা। অবিলম্বে লিভার ট্রান্সপ্ল্যান্ট করতে হবে, গত কিছুদিন ধরে ক্রমাগত বলছেন তার চিকিৎসক এবং দলীয় নেতারা। কিন্তু দেশে লিভার ট্রান্সপ্ল্যান্ট সম্ভব নয়, তাই সাবেক প্রধানমন্ত্রীকে বিদেশে নিয়ে চিকিৎসা করার দাবি জানানো হচ্ছে দলের পক্ষ থেকে। পরিবারের পক্ষ থেকেও গত সপ্তাহে তাকে বিদেশে নেওয়ার অনুমতি চেয়ে আবেদন জানানো হয়েছে। তবে সরকার তার মুক্তির মেয়াদ আরেক দফায় ৬ মাস বাড়ালেও বিদেশে নেওয়ার ব্যাপারে সাড়া দেয়নি।
খালেদা জিয়া দীর্ঘদিন ধরে আর্থ্রাইটিস, ডায়াবেটিস, কিডনি, হৃদরোগ ও লিভার সিরোসিসে ভুগছেন। পরিপাকতন্ত্রে রক্তক্ষরণের সমস্যাও আছে। চিকিৎসকরা বলেছেন, লিভার সিরোসিসের কারণে তার অবস্থা জটিল হয়ে উঠেছে। শরীরে প্রোটিনের মাত্রা কমে যাচ্ছে।
মেডিক্যাল বোর্ডের সদস্য এবং বেগম খালেদা জিয়ার ব্যক্তিগত চিকিৎসক প্রফেসর ডাক্তার এ জেড এম জাহিদ হোসেন বেশ কয়েকবারই জানিয়েছেন, একাধিক জটিল রোগের কারণে সাবেক এই প্রধানমন্ত্রীর চিকিৎসা করা দুরূহ হয়ে পড়েছে। একটা সমস্যার জন্যে ওষুধ দিলে পাশর্^প্রতিক্রিয়ায় আরেকটি সমস্যা বেড়ে যায়।
তার মতে, দেশে যতোটা সম্ভব ছিলো, ততোটা চিকিৎসা করা হয়েছে। এখন দরকার সমন্বিত চিকিৎসা, যা বিদেশের কোনো বড়ো হাসপাতালে করাতে হবে।
দুর্নীতির মামলায় দণ্ডিত হলে ২০১৮ সালে সাবেক এই প্রধানমন্ত্রীর কারাজীবন শুরু হয। করোনাভাইরাস মহামারী শুরুর পর পরিবারের আবেদনের প্রেক্ষিতে ২০২০ সালের ২৫ মার্চ নির্বাহী আদেশে দণ্ড স্থগিত রেখে তাকে ৬ মাসের সাময়িক মুক্তি দেয় সরকার। সেই থেকে তিনি গুলশানের বাসভবন ফিরোজায় অবস্থান করছেন। প্রতি ৬ মাস অন্তর সরকার তার মুক্তির মেয়াদ বাড়িয়ে আসছে।