৩০শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১৭ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | ২০শে শাওয়াল, ১৪৪৫ হিজরি
ব্রেকিং নিউজ
৩০শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১৭ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | ২০শে শাওয়াল, ১৪৪৫ হিজরি
ব্রেকিং নিউজ

সিরিয়ায় বাইকাররা নিয়মিত ইফতার দিচ্ছেন দরিদ্রদের

সিরিয়ার রাজধানী দামেস্কে দরিদ্র-অভাবী মানুষের কাছে প্রতিদিন ইফতার বিতরণ করছে সিরিয়ার শৌখিন মোটরসাইকেল চালকদের (বাইকার) ক্লাব হোপ বাইকার্স সিরিয়া। দামেস্কের বিভিন্ন এলাকায় ইফতারের প্যাকেট বিতরণে অংশ নেন ‘হোপ বাইকার্স সিরিয়া’র ৫০ জন স্বেচ্ছাসেবী। খবর এনডিটিভি।

ক্লাবের প্রধান তারেক ওবায়েদ জানান, ‘এবারের রমজানের শুরু থেকেই আমাদের স্বেচ্ছাসেবীরা দরিদ্রদের মধ্যে ইফতার বিতরণ করছে। ইফতার বিতরণের ক্ষেত্রে দামেস্কের সবচেয়ে দরিদ্র এলাকাগুলোকে আমরা অগ্রাধিকার দিই। স্বেচ্ছাসেবীদের সে রকম নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।’

৫০ বছর বয়সী ওবায়েদ পেশায় একজন সুইমিং কোচ। প্রতিদিনের ইফতার বিতরণ সংক্রান্ত যাবতীয় কাজ তিনি নিজে তত্ত্বাবধান করেন। প্রতিদিন দুপুরের পর ইফতার বিতরণের জন্য বেরিয়ে পড়েন ক্লাবের স্বেচ্ছাসেবীরা। তাদের সবার পরনে থাকে ক্লাবের ইউনিফর্ম নীল রঙের জ্যাকেট এবং সবার বাইকে থাকে সিরিয়ার পতাকা।

তিনি বলেন, ‘মানবিকতাকে অগ্রাধিকার দিয়ে আমরা এই উদ্যোগ নিয়েছি। বাইকারদের মধ্যে এক ধরনের বেপরোয়া মনোভাব থাকে। এ কারণে সাধারণ লোকজন এক সময় বাইকারদের এড়িয়ে চলত। কিন্তু ইফতার বিতরণ কর্মসূচি হাতে নেয়ার পর থেকে এই পরিস্থিতি পুরো বদলে গেছে। যেসব এলাকায় আমরা নিয়মিত ইফতার বিতরণ করি, সেসব এলাকার লোকজন এখন দুপুরের পর থেকে বাইকের শব্দের জন্য অপেক্ষায় থাকেন, আমাদের বাইকারদের দেখলে হাসিমুখে স্বাগত জানান। তাদের ভালবাসা আমরা বুঝতে পারি।’

সিরিয়ার মোট জনসংখ্যার ১০ শতাংশ খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বী। দামেস্কের দারিদ্র্যপীড়িত এলাকাগুলোতে মুসলিমদের পাশাপাশি অনেক খ্রিস্টানও বসবাস করেন। তাদেরকেও ইফতারের প্যাকেট দেওয়া হয় বলে জানিয়েছেন ওবায়েদ।

‘আমরা নিজেদের পকেট এবং শুভানুধ্যায়ীদের কাছ থেকে সংগৃহীত অর্থ দিয়ে এই কর্মসূচি চালাচ্ছি। কোনো রাজনৈতিক দল বা গোষ্ঠীর সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক নেই। আমরা মুসলিমদের পাশাপাশি খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বীদের মধ্যেও ইফতার বিতরণ করি। আমাদের স্বেচ্ছাসেবী দলেও খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বী সদস্য রয়েছেন।’

গত ১৩ বছর ধরে গৃহযুদ্ধ চলছে সিরিয়ার বিভিন্ন প্রদেশে। এই গৃহযুদ্ধের কারণে দেশটির মোট জনসংখ্যার ৯০ শতাংশই বর্তমানে দারিদ্র্যের শিকার।

অবশ্য হোপ বাইকার্স সিরিয়ার স্বেচ্ছাসেবীরা যে এই প্রথম সেবামূলক কাজ করছেন— এমন নয়। ২০২০ সালে করোনা মহামারির সময় লোকজনের বাড়ি বাড়ি অক্সিজেন সিলিন্ডার পৌঁছে দিয়েছেন তারা। তারপর ২০২৩ সালে তুরস্ক-সিরিয়ায় যে ভয়াবহ ভূমিকম্প হয়েছিল, সে সময়ও স্বেচ্ছাসেবী হিসেবে উদ্ধার তৎপরতায় তারা অংশ নিয়েছেন।

ইফতার বিতরণের এই কর্মসূচি চালাতে গিয়ে হোপ বাইকার্স সিরিয়ার স্বেচ্ছাসেবীদের যেসব চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে হচ্ছে, সেগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বড় কোনটি— প্রশ্নের উত্তরে ক্লাবের সদস্য জর্জ হাফতেহ বলেন— পেট্রোলের দাম।

‘যদিও বাইকে তেল কম লাগে, কিন্তু নিয়মিত পেট্রোল কেনা এখন আমাদের জন্য সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ।’

প্রসঙ্গত, গত বছর থেকে জ্বালানি তেলের ওপর থেকে ভর্তুকি প্রত্যাহার করেছে সিরিয়ার সরকার। তারপর থেকে দেশটিতে বেড়েছে সব ধরনের জ্বালানি তেলের দাম

Comments

Facebook
Twitter
Pinterest
Reddit
Skype
Email
LinkedIn

নিউজ আর্কাইভ

সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০