২৯শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১৬ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | ১৯শে শাওয়াল, ১৪৪৫ হিজরি
ব্রেকিং নিউজ
২৯শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১৬ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | ১৯শে শাওয়াল, ১৪৪৫ হিজরি
ব্রেকিং নিউজ

ভ্যাট কমছে ছোট ব্যবসায়ীদের

অপেক্ষাকৃত ছোট ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে ভ্যাট (মূল্য সংযোজন কর) আদায়ে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) নানামুখী উদ্যোগ নিলেও সাফল্য মিলছে না। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে প্যাকেজ ভ্যাটের পরিমাণ বাড়ানো হয়েছে। অন্যদিকে বিক্রয় বা ব্যবসা পর্যায়ে ভ্যাট পরিশোধে স্বচ্ছতা আনাতে তদারকিও বেড়েছে। তা সত্ত্বেও গত কয়েক বছরের পরিসংখ্যান বলছে, প্রতি বছরই এসব প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে সম্মিলিত ভ্যাট আদায় না বেড়ে উল্টো কমছে।
এনবিআরের সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, এ ধরনের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে ২০১৫-১৬ অর্থবছরে আদায় হয়েছিল ২ হাজার ৩৮২ কোটি টাকার ভ্যাট। পরবর্তী অর্থবছর তা কমে দাঁড়ায় ১ হাজার ৮৯২ কোটি টাকায়। আর চলতি ২০১৭-১৮ অর্থবছরের প্রথম আট মাস অর্থাৎ জুলাই থেকে ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত সময়ে আদায় হয়েছে ১ হাজার ১৭৫ কেটি টাকা। বছর বছর ছোট ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে এভাবে ভ্যাট আদায় কমতে থাকায় উদ্বিগ্ন এনবিআরও। সম্প্রতি এনবিআরের সংশ্লিষ্ট বিভাগ থেকে ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআইকে একটি চিঠি পাঠানো হয়েছে। ওই চিঠিতে ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে ভ্যাট আদায়ে এফবিসিসিআইয়ের সহযোগিতা চাওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে, এফবিসিসিআই যাতে ব্যবসায়ীদের সঠিক ভ্যাট পরিশোধের বিষয়ে নির্দেশনা দেয়, সে অনুরোধও জানানো হয়েছে।
অবশ্য ব্যবসায়ী নেতারা বলছেন, এনবিআরের মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তারা ভ্যাট-ট্যাক্স আদায়ের চেয়ে হয়রানি ও গোপন লেনদেনে বেশি মনযোগী। ফলে রাজস্বের কাঙ্ক্ষিত অর্থ সরকারের ঘরে আসছে না।
সূত্র জানিয়েছে, বর্তমানে এনবিআরের বৃহৎ করদাতা ইউনিট বা এলটিইউ-ভ্যাট অফিসে তালিকাভুক্ত প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা প্রায় পৌনে দুইশ’। বড় অঙ্কের ভ্যাট পরিশোধ করায় এসব প্রতিষ্ঠান এলটিইউভুক্ত। বাদবাকি ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানকে ছোট ও খুচরা ব্যবসা প্রতিষ্ঠান হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে। এসব প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে আদায়কৃত ভ্যাটের আদর্শ হার ১৫ শতাংশই। তবে হিসাব রাখার সমস্যা কিংবা ব্যবসায়ীদের ঝামেলা থেকে কিছুটা রেহাই দিতে মূল্য সংযোজনের ভিন্ন ভিন্ন হার ধরে ভ্যাটের হার ঠিক করা হয়। কিছু পণ্য বিক্রি ও সেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে সরাসরি ১৫ শতাংশ হারে ভ্যাট আদায় করা হয়। আবার কিছু প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে ধারণাগত মূল্য সংযোজন ধরে হ্রাসকৃত হারে ভ্যাট আদায় করা হচ্ছে। এটি সঙ্কুচিত মূল্য ভিত্তি বা ট্রাঙ্কেটেড রেট হিসেবে পরিচিত। ১০ ধাপে এ ধরনের ভ্যাটের হার দেড় শতাংশ থেকে ১৫ শতাংশ পর্যন্ত। আবার কিছু পণ্যের ক্ষেত্রে ট্যারিফ ভ্যালু হিসাব করে একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ ভ্যাট আদায় করা হয়। এ প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যেই অপেক্ষাকৃত ছোট ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে আদায় করা হয় প্যাকেজ ভ্যাট। এর আওতায় বার্ষিক একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ ভ্যাট পরিশোধ করে ছোট ব্যবসায়ীরা।
এফবিসিসিআই সভাপতি সফিউল ইসলাম মহিউদ্দিনকে পাঠানো ওই চিঠিতে বলা হয়, ছোট ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে রাজস্ব আদায়ের গতি বর্তমানে সন্তোষজনক অবস্থায় নেই। ব্যবসায়ী ও খুচরা ব্যবসায়ীরা যে রাজস্ব প্রদান করছেন, তা ক্রমান্বয়ে হ্রাস পাচ্ছে। এনবিআরের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ইত্তেফাককে বলেন, ভ্যাট আদায়ের ক্ষেত্রে ব্যবসায়ী সমিতিগুলো সহযোগিতা করছে না। ব্যবসায়ীরা পুরোটাই ফাঁকি দিতে চাচ্ছে। সঠিকভাবে তদারকি করলে এসব ব্যবসায়ীর কাছ থেকে ভ্যাট আহরণ অনেকগুণ বাড়বে।
অবশ্য এফবিসিসিআই সভাপতি সফিউল ইসলাম মহিউদ্দিন ইত্তেফাককে বলেন, ভ্যাট-ট্যাক্স আদায়ের চেয়ে মাঠ পর্যায়ে কর্মকর্তারা ব্যবসায়ীদের হয়রানি ও অবৈধ লেনদেন করছেন। নেগোশিয়েট হচ্ছে বাইরে। এসব গোপন লেনদেন বন্ধ করতে এনবিআরের সক্ষমতা ও প্রযুক্তিগত দক্ষতা বাড়াতে হবে। এছাড়া ভ্যাট আদায় বাড়াতে ঢালাও নির্দেশনার জন্য না বলে সুনির্দিষ্টভাবে বললে এফবিসিসিআই সহযোগিতা করবে।

Comments

Facebook
Twitter
Pinterest
Reddit
Skype
Email
LinkedIn

নিউজ আর্কাইভ

সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০