ঘন ঘন লোডশেডিংয়ে কৃষকের ধানের ব্যাপক ক্ষতি
বিদ্যুতের ঘন ঘন লোডশেডিং শুরু হয়েছে। ফলে দিন-রাতের বেশিরভাগ সময় বন্ধ থাকছে গভীর অগভীর নলকূপ। মাটি খুঁড়ে শ্যালো মেশিন বসিয়েও পানি পাওয়া যাচ্ছে না। পানির অভাবে ফেটে চৌচির কৃষক আবুল মিয়ার বোরো ক্ষেত। চলতি শুষ্ক মওসুমে শুধু যে আবুল মিয়ার বোরো ক্ষেতে পানির এমন অভাব দেখা দিয়েছে তা নয়। প্রয়োজনীয় বৃষ্টিপাত না হওয়ায় পানির তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে রাজশাহী ও বগুড়া অঞ্চলের আট জেলায়। এসব অঞ্চলে রোদের তাপমাত্রা ৩৫ থেকে ৪০ ডিগ্রী পর্যন্ত উঠছে। সঙ্গে বাড়ছে লোডশেডিং। এতে করে সুবিধামতো সেচ দিতে না পারায় তীব্র খরায় পুড়ছে কৃষকের স্বপ্নের ইরি-বোরো ক্ষেত। বিএডিসি ও বরেন্দ্র বহুমুখী সেচ প্রকল্প সূত্র বলছে, ইরি বোরো ক্ষেতে মওসুম ভিত্তিকভাবে সেচ সুবিধা দেওয়া হচ্ছে। চলতি ইরি-বোরো মওসুমে গভীর নলকূপের ক্ষেত্রে সরকারিভাবে বিঘায় সেচ খরচ ধরা হয়েছে ২ হাজার ২০০ টাকা। এ ছাড়া বিদ্যুৎ চালিত শ্যালো মেশিনে বিঘায় কৃষকের সেচ খরচ হচ্ছে ২ হাজার ৫০০ টাকা। রাজশাহী ও বগুড়া কৃষি সম্প্রসারণ অফিস বলছে, এই দুই অঞ্চলের নাটোর, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, রাজশাহী, সিরাজগঞ্জ, পাবনা, বগুড়া ও জয়পুরহাট জেলার ৮ লাখ ১৭ হাজার ৮৬০ হেক্টর জমিতে ইরি-বোরো ধান চাষ করেছেন কৃষক। চলনবিলের কৃষক রুহুল আমিন ইত্তেফাককে বলেন, গত প্রায় ১০ দিন ধরে তিব্র খরা দেখা দিয়েছে। ফলে সমতল ভূমির সেচযন্ত্রে পানি উঠছেনা। এ কারণে মাটির অন্তত দশ ফুট গর্ত করে সেচযন্ত্র বসিয়ে সেচ স্বচল রাখার চেষ্টা করছেন তারা। সব মিলিয়ে শুষ্ক মওসুমের শুরু থেকেই তারা ইরি-বোরো ক্ষেতে সেচ দিতে হিমশিম খাচ্ছেন। কৃষি বিভাগের তথ্য মতে, দুই অঞ্চলের ৯লাখ ৭৭ হাজার ৬৪৯ হেক্টর জমির ফসলে সেচ দিতে মোট ৪ লাখ ৫ হাজার ৯৬২টি সেচ যন্ত্র ব্যবহার হচ্ছে। এর মধ্যে রাজশাহী অঞ্চলে বিদ্যুৎ চালিত গভীর নলকূপ ১ লাখ ১১৬টি, অগভির নলকূপ ১৭ হাজার ৬০৪, ডিজেল চালিত গভির ৫০৩টি, ডিজেল চালিত অগভীর ১ লাখ ২১ হাজার ৯০৮টি এবং বিদ্যুৎ ও ডিজেল চালিত ভ্রম্যমাণ সেচযন্ত্র রয়েছে ৯ হাজার ৪৪৬টি। এ ছাড়া বগুড়া অঞ্চলে ডিজেল এবং বিদ্যুৎ চালিত গভির নলকূপ রয়েছে ৬ হাজার ১৩৩, অগভীর নলকূপ ১ লাখ ৪৩ হাজার ৯৯০টি এবং ভ্রাম্যমান সেচ যন্ত্র রয়েছে ৬ হাজার ২৬২টি। কৃষক আবু সাঈদ ইত্তেফাককে জানান, খরা দেখা দেওয়ায় এসব নলকূপে সুবিধামতো পানি উঠছে না। ১০৬ টাকা লিটার ডিজেল তেল কিনে ইরি-বোরো ক্ষেতে সেচ দিতে হচ্ছে। বিঘায় দৈনিক ৩ লিটার তেলে সেচ খরচ পড়ছে ৩২০ টাকা। ধান ঘরে তুলতে এখনো ৪০ দিনের মতো সময় প্রয়োজন। এপ্রিল মাসজুড়ে খরা এবং লোডশেডিং অব্যাহত থাকলে বিঘায় সেচ খরচ বাড়বে ৯ হাজার ৬০০ টাকা। তারপরও প্রয়োজনীয় পানি না পেলে ধানে ফলন বিপর্যয়ের শঙ্কাও রয়েছে। বিএডিসি ও বরেন্দ্র বহুমুখী সেচ প্রকল্পের স্কীমের ব্যবস্থাপকরা জানান, লোডশেডিংয়ের পর বিদ্যুৎ এলে ভোল্টেজ থাকে খুবই কম। যার ফলে সেচপাম্পগুলো পুড়ে যাচ্ছে। তা ছাড়া ধারাবাহিকভাবে ভূগর্ভস্থ পানির স্তর নিচে নামায় মাটির ৭০ থেকে ১২০ ফুট গভীরে পাম্প বসিয়ে সেচ স্বচল রাখার প্রাণপন চেষ্টা করা হচ্ছে। তবুও কাঙ্খিত পানি পাওয়া যাচ্ছে না। রাজশাহী কৃষি বিভাগের অতিরিক্ত পরিচালক শামছুল ওয়াদুদ বলেন, ইরি-বোরো ধানের জন্য সেচ ব্যবস্থা অত্যন্ত জরুরি। এখন সেচ সংকট হলে ফলন বিপর্যয়ের শঙ্কা রয়েছে।
করোনা শনাক্তে ১৯ জনের মধে সুস্থ ৩৪ জন
দেশে গত ২৪ ঘণ্টায় করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে কারও মৃত্যু হয়নি। তবে এ সময় নতুন করে ১৯ জনের শরীরে এই ভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। এ নিয়ে মোট আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২০ লাখ ৪৯ হাজার ৬৪৫ জন। রোববার (৭ এপ্রিল) স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের করোনাবিষয়ক নিয়মিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়েছে। বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, করোনা আক্রান্তদের মধ্যে ৩৪ জন গত ২৪ ঘণ্টায় সুস্থ হয়ে উঠেছেন। তাদের নিয়ে দেশে মোট সেরে উঠলেন ২০ লাখ ১৭ হাজার ৬৫ জন। ২০২০ সালের ৮ মার্চ দেশে করোনাভাইরাসের প্রথম রোগী শনাক্ত হয়। এর ১০ দিন পর ১৮ মার্চ করোনায় আক্রান্ত হয়ে প্রথম একজনের মৃত্যু হয়।